একজন আইয়ুব বাচ্চু এবং সুমন
দ্বন্ধের শুরু কোথায়?
১২ বছর আগে প্রকাশিত আনন্দধারার একটি সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে গত দুই বছর আগে এই দ্বন্ধের সূত্রপাত।
সুমন
বলেন - বেশ কয়েক বছর আগের কথা। এলআরবি ব্যান্ডের একটা ইন্টারভিউ আনন্দধারা
ম্যাগাজিনে ছাপা হয়। সেখানে এলআরবি তাদের ব্যান্ডের কথা বলতে বলতে হঠাত
আমাকে এবং অর্থহীন ব্যান্ডকে আক্রমন করা শুরু করে! (২৯শে সেপ্টেম্বর,২০১৪)
২০০৪ সালে দেয়া সাক্ষাৎকারের প্রতিবাদ শুরু হয় ২০১৪ সালে।
দ্বন্ধ কেন?
সেই সাক্ষাৎকারে আইয়ুব বাচ্চু বলেছিলেন বাংলা গানে সুমন বা অর্থহীনের কোন অবদান নেই।
সাক্ষাৎকারের যেই অংশ নিয়ে দ্বন্ধ –
আইয়ুব বাচ্চুঃ নতুনদের যদি আমরা সিনিয়ররা সাপোর্ট না দিই, তাহলে ওরা বেড়িয়ে আসবে কিভাবে? এটাই কারন।
স্বপনঃ
কিন্তু বস অর্থহীনের সুমন তো বলে নাকি আইয়ুব বাচ্চু পারসোনালি নতুনদের কোন
সুযোগ দেয় না! এটা পারটিকুলারলি এই সুমন বলে বেড়ায়। এটা মনে হয় আপনাদের
সবার জানা উচিত।
আনন্দধারাঃ আমি এটা শুনিনি। অর্থহীনের সুমন এমন কিছু
বলেছে কিনা জানিনা। তবে জানি সুমন নিজেও নতুন ব্যান্ডেদের নিয়ে কাজ করেন,
যেভাবে এলারবি নতুনদের হেল্প করে। এলআরবি বা আইয়ুব বাচ্চুকে কাছে থেকে
চিনি, আমি দেখেছি নতুন ব্যান্ড বা নতুন কোন সিঙ্গারকে কিভাবে সুযোগ করে
দেয়া হয়।
আইয়ুব বাচ্চুঃ সুমন যদি এমন কমেন্ট করে বেড়ায় আমাকে বা
এলারবিকে নিয়ে, করতেই পারে। ওর সে যোগ্যতা আছে। কারন ও বেইজটা ভালই বাজায়।
কিন্তু এভাবে কমেন্ট করে বেড়ালে যেটা হবে সেটা হচ্ছে কোন মিউজিশিয়ান হয়তো
কারো পাশে গিয়ে দাঁড়াবে না। যেমন লাস্ট কনসার্টে ব্ল্যাকের মিরাজের পাশে
এসে দাড়িয়েছিলাম আমরা সবাই। এমনটি হয়তো আর হবেনা যদি সুমন দের সংখ্যা এভাবে
বেড়ে যায়। আর যদি এমন মন্তব্য শুনি আমরা, তাহলে কি কারো পাশে গিয়ে দাঁড়ানো
যায়?
আর একটা কথা সাধারন পাঠক এবং শ্রোতাদের জন্য বলি- amadergaan.com-
এ যা বলা হয়, তা-ই যেন সবাই না জেনে না বুঝে বিশ্বাস না করেন। এটা সুমন
পরিচালনা করে। বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশ এবং বাংলা গান সম্পর্কে ভুল ধারনা দেয়ার
অধিকার ওদের নেই। বাংলা ব্যান্ড মিউজিক আজকের পর্যায়ে আসার পেছনে
অর্থহীনের কোন অবদান নেই। ব্যান্ড মিউজিকে নতুন মাত্রা যোগ করেছি আমরা-
এলারবি, মাইলস, নগর বাউল, সোলস, ফিডব্যাক, ওয়ারফেইস, রেনেসাঁসহ কয়েকটি
ব্যান্ড। এখন যোগ করছে আর্টসেল, ব্ল্যাক- অর্থহীন না। হতে পারে অর্থহীন ভাল
ব্যান্ড।
অর্থহীন যা হবে হোক, এইভাবে মন্তব্য করাটা সেইসময় বা এইসময় কেউ মেনে নেয়নি।
কি বলতে চাচ্ছি?--
বাংলা
মিউজিকে আইয়ুব বাচ্চু এবং অর্থহীন কারো অবদান খাটো করে দেখার মত নয়। আমরা
আইয়ুব বাচ্চু শুনেই বড় হয়েছি। সেই তুমি বা তারা ভরা রাত শুনে নাই এইরকম
মানুষ বাংলাদেশে হাতে গুনে নেওয়া যাবে। অর্থহীনের চাইতে পারোও শুনে নাই
সেরকম মানুষের সংখ্যাও খুব কম।
হ্যাঁ, সময় একটা ফ্যাক্ট। ১২ বছর আগে
বাচ্চু লিজেন্ড থাকলেও সুমন বা অর্থহীন লিজেন্ড ছিল না। সুমনকে আজকের
যতগুলো মানুষ চিনে তার অর্ধেকও চিনতো না। তারপরেও বাংলা গানে ভূমিকা থাকুক
বা না থাকুক আইয়ুব বাচ্চুর এইভাবে বলা উচিত হয়নি।
কিন্তু সুমন বা অর্থহীন তখন কোন প্রতিবাদ করেনি। এর মধ্যে অর্থহীন এবং এল আর বি এক মঞ্চে গানও করেছে।
১০ বছর পর হঠাৎ সুমন ঐ ইস্যুকে কেন সামনে আনল?? বা এতোদিন আনলো না কেন?
ঠিক আছে, আনার দরকার ছিল আনছে। সবাই মিলে আইয়ুব বাচ্চুকে বছর দুয়েক ব্যাপক পচানো হল।
একটা
জিনিস লক্ষ্যনীয় যে, আইয়ুব বাচ্চু এর পরে চুপ থাকলেও সুমন বা অর্থহীন গত
দুবছরে একদিনের জন্যও থামে নাই। প্রতিদিন কোন না কোন ভাবে আইয়ুব বাচ্চুকে
হেয় করে যাচ্ছে।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে – সুমন বা অর্থহীনের গান, গানের ক্লাস এবং শ্রোতাদের ক্লাসের সাথে কি রেগুলার গু ঘাটা ক্লাসটা যায় কিনা?
মিউজিক
দুনিয়ায় দ্বন্ধটা নতুন কিছু না, মেটালিকা/মেগাডেথ, গানস এন্ড
রোজেস/নিরভানা, রোডস/ভ্যান হেলেন, ডিও/ক্যাম্পবেল অনেক দ্বন্ধ দেখেছি বা
জেনেছি, কিন্তু এইরকম গু ঘাটা চরিত্র ওদের কারো মধ্যেই কোন সময় দেখা যায়নি।
বরং
এই দ্বন্ধ থেকে ভালো কিছু আসছে, মেটালিকা থেকে ডেভ মাস্টেইনকে বের করে
দেয়ার ফলে মেগাডেথের সৃষ্টি। সেই মেগাডেথই আজ থ্র্যাশের বিগ ফোরের একটা।
দেশে
আসি, মাইলস এবং এল আর বিরও একটা বিরোধ হয়েছিল। শাফিন আহমেদ কয়েকদিন পরেই
চুপ হয়ে গিয়েছিল। ২ বছর ধরে কাঁদা ছুড়াছুড়ি করেন নাই। যার কারণে এখন হয়ত
ওদের বিরোধও মিটে গেছে।
কারণ, সব কিছুর উপর গান এবং মিউজিশানদের সম্মান। অন্য কেউ করলো না বলে যদি আপনিও না করেন তাহলে আপনি কি উনার চেয়ে উত্তম হলেন?
আপনি সুমন ভাই করতে পারেন, আপনার সে যোগ্যতা আছে বলে বাচ্চুদাও স্বীকার করছেন কিন্তু মার্ক ডনও কেমনে করে?
অর্থহীনের জন্য লজ্জা।
এতো
কিছু বলার একটায় কারণ, সুমনকে সুমনের ক্লাসে থাকতে হবে। বর্তমানে যেটা
চলছে সেটা পাড়ার গায়ে হলুদ ব্যান্ডের ক্লাস, প্রোগ্রামের মান নিয়ে কথা বলছে
দেখে এইবার যুদ্ধ শুরু করছে।
যারা সুমন ভাইয়ের স্ট্যাটাসে জয় বেজবাবা বলে মন্তব্য করে ওদের সেই মন্তব্য দেখে কি সুমন ভাই আনন্দে আত্মহারা হন?
ভাইজান, ওরা জানেও না আইয়ুব বাচ্চু আর আপনার দ্বন্ধটা কেন,
ওরা
জানেনা সূর্য গানটা কোন অ্যালবামের। ওরা সত্যিকার অর্থেই গুটি সিরিজের সব
গুলোর নাম জানেনা। কোনটি কোন অ্যালবামে তা জানা অনেক দূরের ব্যাপার।
সুমন ভাই ওরা আঁশটে সত্য বা বেদনার চোরাবালি কার গান জানে না, হয়ত জানবে না কোনদিন।
স্মার্টফোনের ডাউনলোড ফ্যানদের পাশাপাশি আমাদের মত আইয়ুব বাচ্চুর গান শুনে বড় হওয়া অর্থহীন ফ্যানদের কথা কি বেজবাবা মাথায় রাখবেন??
সুমন ভাই এবং অর্থহীনের এইবার থামা উচিত।
"ক্যান্সারের নিশিকাব্য" এর লিরিক দেখে বুঝলাম, উনারা গানের চেয়ে আইয়ুব বাচ্চুর উপর বেশী মনোনিবেশ করছেন।
সুমন ভাইয়ের কাছ থেকে এতো সস্তা লিরিক কোন ভাবেই মানা যায় না।
চাইতে পারো, নিকৃষ্ট আগের গুলো শোনার পর এইবারের গুলো শুনলে স্বাদ নষ্ট হচ্ছে। গুটিটা তাও চলে।
এইবারের অ্যালবামের পাওয়ার মত যা পাইছি তা হলো শিশির ভাইয়ের বাজানো।
যাহোক, তাও শুভকামনা রইল।
শুভ কামনা অর্থহীন
No comments:
Post a Comment
SuccessFully Published Your Comment. Thanks my Dear Friends